শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
জলবায়ু সম্মেলন শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু শ্রম খাত সংস্কারের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার আওয়ামী লীগের মতো পরিবারতন্ত্র করবে না বিএনপি: তারেক রহমান ‘নতুন প্রস্তাবের সঙ্গে ৩১ দফা মিলে যাবে’ এ বছর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ছে না দুর্বল সাত ব্যাংক সহায়তা পেল ৬৫৮৫ কোটি টাকা আইন উপদেষ্টাকে হেনস্তা: জেনেভা মিশনের শ্রম কাউন্সেলরকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ পিবিআইর কাছে সাগর-রুনি হত্যার ৩২০১ পৃষ্ঠার নথি হস্তান্তর আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা ‘আন্দোলনে গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে পাঠান’ ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিশেষ ‍দূত নিয়োগ ট্রাম্পের ১৩ শতাধিক সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয় আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক যুবকদের লক্ষ্য অর্জনে স্বপ্ন দেখার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

মালয়েশিয়ায় চাকরিপ্রত্যাশীরা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : অক্টোবর ৪, ২০২৪
মালয়েশিয়ায় চাকরিপ্রত্যাশীরা সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি

মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে চাকরিপ্রত্যাশী কর্মীদের থেকে জনপ্রতি ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা আদায় করা হলেও দেশটির অনুমোদিত ১০১ এজেন্সিকে ফি বাবদ দিতে হয়েছে জনপ্রতি মাত্র ১.৫২ লাখ টাকা। জনপ্রতি বাকি সাড়ে তিন লাখ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা কে বা কারা নিয়েছেন, তার সঠিক উত্তর জানা নেই জনশক্তি রপ্তানীকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ’র (বায়রা) বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম ও যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল ইসলামের।

তবে, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল ইসলাম মালয়েশিয় সরকারের অনুমোদিত ১০১ বাংলাদেশী এজেন্সিকে সিন্ডিকেট দাবি করে তিনি ওই এজেন্সি মালিকদের মাধ্যমে প্রায় ২৪,০০০ কোটি টাকা পাঁচারের অভিযোগ করেন এবং ওই অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

সিন্ডিকেট না করলে দুই থেকে তিন লাখ টাকায় মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো সম্ভব বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) সিনিয়র সদস্য বিএনপি নেতা খন্দকার আবু আশফাক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বায়রার যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সিন্ডিকেট সৃষ্টি করা হয়।

যার মূলহোতা ছিলেন বায়রার সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন ও কাজী মফিজুর রহমান। এই হোতাদের সহযোগিতা করতেন তখনকার মন্ত্রী আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা বায়রাকে একটি দলীয় সংগঠন হিসেবে ব্যবহার করতেন।

ফখরুল ইসলাম বলেন, সিন্ডিকেটে রুহুল আমীনের সঙ্গে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক এমপি নিজাম হাজারী, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের শুক্রবারের বাংলাদেশ সফরকে স্বাগত জানিয়ে তিনি ভবিষ্যতে দেশটির শ্রমবাজারের পূনরায় সিন্ডিকেট তৈরির সুযোগ না দিয়ে বাংলাদেশের সকল বৈধ রিক্রটিং এজেন্সিকে সুযোগ দেওয়ারও দাবি জানান।

মালয়েশিয়া সরকার ১০১ এজেন্সিকে অনুমোদন দিলেও বাংলাদেশের ৭৩৫টি বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি তাদের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানীর সুযোগ পেয়েছেন। ১০১ এজেন্সি মালিকরা মাত্র ১.৫২ লাখ টাকা ফি নিলেও বাকি টাকা কারা পেয়েছেন, এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভিসা প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন ফি বাবদ অনুমোদিত ওই ১০১ এজেন্সি জনপ্রতি ১.৫২ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। বাকি টাকা বিমানের টিকেট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ভিসা বাণিজ্যসহ (ট্রেডিং) নানা খাতে ব্যয় হয়েছে। তবে অনুমোদিত এজেন্সিগুলোকে ফি দিতে না হলে কর্মীরা মাত্র সাড়ে ৩ লাখ টাকায় যেতে পারতেন।

২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত দেশটিতে ৪,৭৬,০০০ কর্মী গেছেন এবং বাকি প্রায় ৫০,০০০ কর্মী যেতে পারেননি। এরমধ্যে প্রায় ১৭,০০০ কর্মী সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পরও যেতে না পারার জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন তিনি।

২০২৪ সালের ৩১ মে থেকে মালয়েশিয়া সরকার ১৪টি সোর্স দেশের সবগুলো থেকে একযোগে কর্মী নেওয়া বন্ধ করেছে। এরসঙ্গে সিন্ডিকেটের সম্পর্ক বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন জবাব দিতে পারেননি।
তবে জানান, বর্তমানে সকল দেশ থেকেই কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন করে প্রায় এক লাখ কর্মী নেওয়া হবে। তবে সিন্ডিকেট সদস্যরা আবারো বাজারটি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।

ফখরুল ইসলাম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আবারো মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানীর চেষ্টা বন্ধ এবং সকল বৈধ এজেন্সির মাধ্যমে দেশটিতে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে মালয়েশিয় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম. রিয়াজ উল ইসলাম দাবি করেন, ২০১৬ সাল থেকে জনশক্তি রপ্তানীখাতে সিন্ডিকেট শুরু হলেও শুধুমাত্র ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে এই সিন্ডিকেটের ১০১ রপ্তানীকারকের মাধ্যমে বিদেশে কর্মী পাঠিয়ে প্রায় ২৪,০০০ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে।

ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, বায়রা নেতা নুরুল আমিন, হক জহিরুল জুও, কামাল উদ্দিন দিলু, মাহবুব করীম জাফর ও আজাদুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ