মাশরাফি বিন মুর্তজা খুশি হতে পারেন, তাঁর দল তো জিতেছে। আবার মাশরাফি বিন মুর্তজা কিছুটা বিমর্ষও হতে পারেন এই ভেবে যে, দল জিতল তিনি বিরতি নেওয়ার পর।
ঘটনাটা হয়তো কাকতালীয়, হয়তো এর ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যাও দাঁড় করানো যায়। মাশরাফি বিন মুর্তজার কারণে সিলেট স্ট্রাইকার্সের জয় আটকে ছিল, এমন তো নয়। তবে ঘটনাটা এই, মাশরাফি বিরতি নিয়ে আপাতত বিপিএল থেকে দূরে আছেন, আর মাশরাফিকে ছাড়া নেমে প্রথম ম্যাচেই ঘুচল সিলেটের জয়খরা। দুর্দান্ত ঢাকাকে আজ ১৫ রানে হারিয়েছে সিলেট।
অবশ্য কাকতালে বিশ্বাসী মানুষ দাবি করতেই পারেন, ভাষার মাসকে সম্মান জানাতে আজ যে বাংলায় নাম লেখা, সবুজ রংয়ের জার্সি পরে নেমেছে সিলেট, তাতেই জয়টা এসেছে।
মাশরাফির বদলে আপাতত অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া মোহাম্মদ মিঠুনের ফিফটিতে আগে ব্যাট করে সিলেট করেছিল ১৪২ রান – সর্বশেষ পাঁচ ইনিংসে তাদের সর্বোচ্চ স্কোর। এবারের বিপিএলে এর চেয়ে বেশি রান (১৭৭) সিলেট শুধু করেছিল নিজেদের প্রথম ম্যাচেই। তা ১৪৩ রানের মাঝারি স্কোর নিয়েই দুর্দান্ত ঢাকাকে তারা ১২৭ রানে আটকে দিল রিচার্ড এনগারাভার দারুণ বোলিংয়ে। ঢাকার দুই ওপেনারসহ চার ব্যাটসম্যানকে আউট করেছেন এনগারাভা (৪ ওভারে ৩০ রানে ৪ উইকেট)।
লক্ষ্য খুব একটা বড় নয়, তবে ওভারপ্রতি ৭-এর বেশি রান যেখানে দরকার, এমন ইনিংসে ঢাকার ব্যাটিংটা ভালো হলো না। দলীয় সর্বোচ্চ ২৭ রান যখন এসেছে নয় নম্বরে নামা ‘বোলার’ তাসকিন আহমেদের ব্যাট থেকে, দলের সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটও তাঁর, এর বাইরে কেউ ২০-এর বেশি করতে পারেননি – এতটুকুই যা বলার বলে।
চতুর্থ ওভারের মধ্যেই ১৯ রানে দুই ওপেনার নেই! পাকিস্তানের সায়েম আইয়ুবকে (৯ বলে ১৩) দ্বিতীয় ওভারে এলবিডাব্লিউ করলেন এনগারাভা, নিজের পরের ওভারের প্রথম বলে জিম্বাবুয়ের পেসার বোল্ড করে দিলেন নাঈম শেখকে।
অ্যালেক্স রস আর সাইফ হাসানের জুটিতে এরপর পথ খোঁজার আশা ছিল ঢাকার। কিন্তু অষ্টম ওভারের শেষ বলে দলের রান যখন ৫০, সাইফ (১৯ বলে ১৭) রানআউট হয়ে গেলেন! চার বল পর আরও বড় ধাক্কা, রসও (১৮ বলে ২০) এলবিডাব্লিউ হয়ে গেলেন রেজাউর রহমান রাজার বলে। কিছুক্ষণ পর নাঈম হাসানের বলে ইরফান শুক্কুর এলবিডাব্লিউ হলেন, ৬৬ রানে শেষ ঢাকার ইনিংসের অর্ধেক।
এরপর যা আশা-ভরসা ছিলেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন আর আফগান ব্যাটসম্যান গুলবদীন নাঈব। কিন্তু ১৫তম ওভারে মোসাদ্দেক (১৪ বলে ১১) আউট হলেন, ১৭তম ওভারের প্রথম বলে গুলবদীনকে (১২ বলে ১২) ফেরালেন এনগারাভা। ৮৬ রানে নেই ৭ উইকেট। সেখান থেকে যে শেষ পর্যন্ত ১০০ পেরিয়ে ৯ উইকেটে ১২৭ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে ঢাকা, সেটা তাসকিনের ৬ চারে সাজানো ইনিংসটির সৌজন্যে।