মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করে বিদ্রোহী বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যুদ্ধাপরাধ চালাচ্ছে জান্তা সরকারের সেনাবাহিনী। সম্প্রতি মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতির প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে।
২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নেয় দেশটির সামরিক জান্তা। এর পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে নৃশংসতা চালাচ্ছে তারা। বেসামরিক নাগরিকদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং বিভিন্ন এলাকায় হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোতেও বোমাবর্ষণ করেছে জান্তা বাহিনী।
সেনা বাহিনী প্রতিরোধে লড়ছে মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী ও বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যোদ্ধারা। রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে দেশটি।
জান্তা বিরোধী লড়াইয়ে মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকা ও সেনাঘাঁটি দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। এ সময় কয়েক হাজার সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আটক করে তারা। তবে তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করেছে প্রতিরোধ বাহিনীর সদস্যরা।
কারেন্নি রাজ্য দখলে গত ১৩ নভেম্বর অভিযান চালায় বিদ্রোহী প্রতিরোধ বাহিনী (কেএনডিএফ)। এ সময় সেখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে পড়া ৩০ সেনা সদস্যকে হত্যার পরিবর্তে তাদেরকে আত্নসমর্পণের সুযোগ দেয় তারা। এমনকি বোমা হামলা থেকে আটক সেনাদের বাঁচিয়ে তাদের চিকিৎসা দেয় কেএনডিএফের সদস্যরা।
তিন মাস আগে ম্যাগওয়ে অঞ্চলে প্রতিরোধ বাহিনীর দুই সদস্যকে গাছে ঝুলিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে দেশটির সেনাবাহিনী। হত্যার আগে ওই তরুণদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় তারা।
এদিকে জান্তা বিরোধীদের রুখতে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছে বিদ্রোহীদের আক্রমণে কোণঠাসা সেনাবাহিনী। ইয়াঙ্গুন, বাগো, তানিনথারি অঞ্চল এবং মোন রাজ্যে ‘পিপলস মিলিশিয়াস’ নামে নতুন বাহিনী গঠন করেছে তারা। তাদের দেওয়া হচ্ছে নগদ অর্থ, খাবার ও অস্ত্র সহায়তা। ২৭ অক্টোবর মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোট- থ্রি ব্রাদারহুড, সেনা বিরোধী অপারেশন শুরুর পর থেকেই জান্তা বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।