মিয়ানমারের চিন প্রদেশের বাসিন্দারা সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে ভারতের মিজোরামে পালাচ্ছেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা সত্তে¡ও গত এক বছরে কয়েক হাজার মিয়ানমারের নাগরিক মিজোরামে প্রবেশ করেছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এ তথ্য।
সবশেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মিজোরামে ৩১ হাজার শরণার্থী রয়েছে। যার অধিকাংশই মিয়ানমারের নাগরিক। যদিও বিভিন্ন এনজিও বলছে আসলে সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি।
বিবিসি বলছে, মিয়ানমারে ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হওয়া অন্তত ১৪ জন এমপিও এই দলে আছেন। গত বছর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর তারা বিভিন্ন সময়ে মিজোরামে প্রবেশ করেন।
মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের মিজোরাম রাজ্যকে আলাদা করেছে ঢিয়াউ নামের একটি নদী। দুদেশের মধ্যে এখানে সীমান্ত স্বাভাবিক অবস্থায় একেবারেই শিথিল। তবে গত দেড়বছর ধরে এই সীমান্তে কড়া পাহারা দিচ্ছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তবে এরপরও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মিজোরামে প্রবেশ করছে মিয়ানমারের নাগরিকরা।
ভারত সরকার মিয়ানমারের নাগরিকদের ঠেকাতে তৎপর হলেও মিজোরাম রাজ্য সরকার ও স্থানীয়রা এই হাজার হাজার বহিরাগতকে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়েছে, নিজেদের সাধ্যমতো তাদের আশ্রয় দিয়েছে – খাবারের ব্যবস্থা করেছে।
মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা বলেন, এদের (মিয়ানমারের নাগরিক) সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। আমরা একই পরিবার, শুধু সীমান্তের দুদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছি। আজ পরিবারের কিছু সদস্য ওদিকে বিপদে পড়েছেন, ফলে তাদের তো আমাদেরই সাহায্য করতে হবে, তাই না? এটা একান্তভাবেই আমাদের ফ্যামিলি ম্যাটার।
মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গাও বলেন, নিজেদের লোক বলেই শুধু নয়, মানবিক কারণেই মিজোরাম এদের পুশ ব্যাক করতে পারবে না। এমনকী, আমি তো বলব রোহিঙ্গাদেরও ভারতের ফেরানো উচিৎ নয়।
জোরামথাঙ্গার দৃঢ় বিশ্বাস, মিয়ানমারের পরিস্থিতি একটু স্থিতিশীল হলে বা সেনা অভিযানে একটু ঢিলে পড়লেই এই শরণার্থীরা অনেকেই দেশের পথে পা বাড়াবেন।