ইউক্রেনের অবস্থা দেখে তাইওয়ানে বন্দুক চালানো শেখার হিড়িক পড়ে গেছে। দেশটির মধ্যে বিশেষ করে চীনকে নিয়ে শংকা তৈরি হয়েছে। তাদের ধারণা, বড় দেশ হিসেবে রাশিয়া যদি ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে তবে বড় দেশ হিসেবে চীনও তাদের ওপর যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে। বিশেষ করে তাইওয়ানের প্রতি চীনের বিমাতাসূলভ আচরণ তাদের আরও বেশি শঙ্কিত করে তুলেছে। খবর: ডয়চে ভেলে।
বড় প্রতিবেশী দেশ যখন-তখন তার ছোট প্রতিবেশীর ওপর হামলা চালাতে পারে- এই বিষয়ে এখন আর কোনো সংশয় নেই অনেক তাইওয়ানবাসীর মনে৷ তাদের অনেকে মনে করেন, চীনও যে কোনো সময় তাইওয়ানে হামলা চালাতে পারে এবং তেমন কিছু হলে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য লড়তে হবে। তাই সেই প্রস্তুতি এখনই শুরু করা ভালো৷ সেই ভাবনায় ইতোমধ্যে বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণে নাম লিখিয়েছেন অনেকে৷
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া৷ তারপর থেকে তাইওয়ানবাসীদের মাঝে বন্দুক প্রশিক্ষণে আগ্রহ যে হারে বাড়ছে এমন আগে কখনেও দেখা যায়নি৷ রাজধানী তাইপের অদূরের পোলার লাইট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী মাক্স-চিয়াং জানালেন, জীবনে কোনোদিন বন্দুক হাতে নেননি, এমন অনেকেই আসছেন বন্দুক চালানো শিখতে৷ সংখ্যাটা নাকি আগের তুলনায় তিন থেকে চারগুণ!
গত তিন মাসে তাইওয়ানের প্রায় সব বয়স আর পেশার মানুষের মাঝেই বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণে আগ্রহ বেড়েছে৷ বলা হচ্ছে, ট্যুর গাইড থেকে ট্যাটু আর্টিস্ট পর্যন্ত মোটামুটি সবাই বিশেষ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে গুলি চালানোয় দক্ষ হতে চাইছেন৷
ইউক্রেন পরিস্থিতি তাইওয়ানের রাজনীতিবিদদের বড় একটা অংশকেও দুশ্চিন্তায় ফেলেছে৷ তাদের কেউ কেউ যু্দ্ধপরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতিও শুরু করেছেন৷ ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টির নেতা লিন পিং-ইউ জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরু হলে যাতে কিছুদিন ঘরে নিরাপদে দু-মুঠো খেয়ে বাঁচতে পারেন তা নিশ্চিত করতে শুকনো খাবার এবং ব্যাটারির মতো কিছু জিনিস জমিয়ে রেখেছেন৷ জনগণকেও এমন প্রস্তুতি রাখতে বলেছেন তিনি৷
ট্যাটু আর্টিস্ট সু চুন বললেন, ‘‘বেশির ভাগ মানুষই যুদ্ধে যেতে চায় না৷ যুদ্ধ আমিও চাই না৷ কিন্তু এখন যা যা ঘটতে দেখছি, তাতে যুদ্ধের মানসিক প্রস্তুতি আমি নিয়ে রাখবো৷’’ তিনি আরো জানান, সবার মতো আপাতত এয়ারগান চালানো তো শিখবেনই, সঙ্গে সম্ভব হলে সম্মুখযুদ্ধের কায়দা-কানুন এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে রক্ষা করার যাবতীয় কৌশলও রপ্ত করবেন৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।