রাজধানীতে মাছ, খাসি, গরু ও মুরগির দাম বেড়েছে। সপ্তাহ খানেক আগে ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রি হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে। সে মাংস এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ৯৮০ টাকা কেজি দরে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, মুগদা, শনিরআখড়া, মিরপুর, মেরুল বাড্ডা , রামপুরা, হাতিরপুল সহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ টাকা করে। লেয়ার মুরগি (লাল) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা করে।
এদিকে প্রজনন মৌসুম হওয়ায় আজ শুক্রবার থেকে আগামী ২২ দিনের জন্য ইলিশ মাছ ধরা ও ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে বাজারে ছিল না ইলিশ মাছ। চাহিদার শীর্ষে থাকা এ মাছ না থাকায় অন্য মাছে নির্ভর করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। যার প্রভাব পড়েছে অন্য মাছের দামে। তাতে সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা।
কারওয়ানবাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেড় কেজির বেশি ওজনের কাতলা ও রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা। আর এক কেজির কম ওজনের বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। যা সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ থেকে ৭০ টাকা বেশি। এছাড়াও টাটকিনি, টেংরা ও মাঝারি আকারের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাশের দামও বেড়েছে। বড় আকারের পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে, আর একটু ছোট পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে। এসব মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
বাজার ঘুরে আরও দেখা যায়, প্রতি কেজি কই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, শিং আকার ভেদে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, কাতল ৩৮০ টাকা, শোল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষুদ্ধ ক্রেতারা। কথা হয় বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জুনায়েদ শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব মাছের দাম বেড়েছে। স্বল্প আয়ের লোকদের কিনে খাওয়ার মতো মাছ বাজারে নেই।
আরেক ক্রেতা ভ্যানচালক আহসান উল্লাহ বলেন, আমরা তো আর দামি মাছ কিনে খেতে পারি না। পাঙাশ আর তেলাপিয়া আমাদের ভরসা। কিন্তু সেগুলোর দামও বেড়েছে। পাশাপাশি সবজিসহ সব খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় আগে যেখানে এক কেজি তেলাপিয়া কিনতাম এখন সেখানে আধা কেজি নেই। আর বাসায় বলেছি মাছের টুকরা ছোট ছোট করতে।
বাজারে প্রতি কেজি করলা ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, পটল, ঢেড়স ও শসা ৬০ টাকা করে, টমেটো ১৪০, গাজর ১২০-১৩০, পেঁপে, কাঁচা কলা ও আলু ৩০ টাকা করে এবং বরবটি ৬০-৭০ টাকা করে বিক্রি করছেন সবজি ব্যবসায়ীরা।
এদিকে সবজির বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারে শীতের সবজি শিমের দাম কমেছে ২০ টাকা। যা গত সপ্তাহে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকায় এবং আজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এছাড়া ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা ও মুলা প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
লালশাক এক আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা দরে। ডাঁটাশাক ২৫ টাকা আর পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। এছাড়া প্রতি পিস লাউ ৫০-৭০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।