সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের অক্টোবরেই বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে।
বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাঈদ একরাম উল্লাহ জানান, প্রকল্পের কাজ বেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৮৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং পরীক্ষামূলক উৎপাদনে প্রথম ইউনিট প্রায় প্রস্তুত।
বিআইএফপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, প্রকল্পের যে অগ্রগতি দৃশ্যমান সে অনুযায়ী বলা যায়, রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিট চলতি বছরের অক্টোবরে উৎপাদনে আসবে এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে।
তিনি জানান, তেমন কোনো সঙ্কট না হলে আশা করা যায় দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে উৎপাদনে আসবে।
রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গোপালগঞ্জ হয়ে খুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ইউনিটে উৎপাদন শুরু হলে ঢাকায় আসবে সেখানকার বিদ্যুৎ। গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন ৪০০কেভি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে ঢাকায় যুক্ত হবে রামপালের বিদ্যুৎ।
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প ও সঞ্চালন লাইন নির্মাণের অগ্রগতি সম্পর্কে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, কাজ ইতিবাচকভাবেই এগিয়ে চলছে। পায়রার পরে বড় স্থায়ী কেন্দ্র হিসেবে রামপাল থেকে চলতি বছরেই বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। সঞ্চালন লাইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনার কারণে কাজের গতি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। তবে এখন নির্মাণ কাজ বেশ দ্রুতই এগিয়ে চলছে। আশা করা যায় এ বছরের মধ্যেই পদ্মার ওপর দিয়ে সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজ শেষ করে পায়রা ও রামপাল থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত ও ঢাকায় সরবরাহ করা যাবে।
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১০ সালে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট বোর্ড- বিপিডিবি ও ভারতের এনটিপিসির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হয়। তখন বলা হয়েছিল ২০১৬ সালেই উৎপাদনে আসবে রামপাল। কিন্তু নানা কারণে কয়েক দফায় সময় বাড়িয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো। এরপর করোনার প্রভাবে আরো পিছিয়ে যায় নির্মাণ কাজ।
ভারতের এনটিপিসি এবং ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড-ভেল নামে দু’টি সংস্থা রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত আছে। এছাড়া রামপাল কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহে কাজ করবে দেশীয় বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।
কয়লাভিত্তিক মেগা এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের খরচ প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। এখান থেকে দুই ইউনিটে ৬৬০ মেগাওয়াট করে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে।