রাশিয়ার পাশেই ফিনল্যান্ডের অবস্থান। দেশ দুটির মধ্যে ৮০০ মাইল জুড়ে সীমান্ত এলাকা রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম সুখী দেশের তালিকাতেও রয়েছে দেশটি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি ন্যাটোর সঙ্গে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেখা দিয়েছে বিপত্তি। ইতোমধ্যে ভ্লাদিমির পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ন্যাটোর সঙ্গে যোগ দেওয়া ফিনল্যান্ডের জন্য ভালো হবে না।
এদিকে ন্যাটোর সঙ্গে যোগ দিলে রাশিয়া হামলা চালাতে পারে এমন ভাবনা মাথায় নিয়ে দেশটিতে গড়ে তোলা হয়েছে এক গোপন শহর। রাজধানী হেলসিঙ্কির নিচে এই শহর গড়ে তুলেছে ফিনল্যান্ড। এখানে রয়েছে সড়ক, খেলার মাঠ, সুইমিংপুল, হকি মাঠ, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। পারমাণবিকসহ যেকোনো যুদ্ধের মধ্যে ৯ লাখ মানুষ কয়েক মাস ধরে সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে। শুধু হেলসিঙ্কি নয়, দেশজুড়ে এমন পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটি।
দেশটির প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্যই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া হেলসিঙ্কি তাদের জনসাধারণের দৈনন্দিন ব্যবহারের জায়গাগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র, বোমা শেল্টার ও বাংকার বানিয়েছে।
হেলসিঙ্কির সিভিল ডিফেন্স ডিপার্টমেন্টের একজন কর্মকর্তা টমি রাস্ক বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের রক্ষা করতে হবে, এ জন্যই আমাদের এ ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।’
ফিনল্যান্ডের নাগরিক কারে ভার্টিয়ানেন বলেন, ‘আমাদের একটি ভয়ংকর প্রতিবেশী দেশ রয়েছে। ন্যাটোতে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।’
ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মার্টিন বলেন, ‘আমরা আশা করি, পার্লামেন্ট ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করবে। শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এ প্রজন্ম কিংবা পরবর্তী প্রজন্মের ওপর হামলা চালাতে পারে রাশিয়া এমন আশঙ্কা থেকেই এই গোপন শহর গড়ে তোলা হয়েছে। ফিনিশ ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনালের শীর্ষস্থানীয় গবেষক চ্যার্লি স্যালোনিয়াস-পাসটারনাক বলেন, ‘একটি ঐতিহাসিক ধারণা আছে, সব সময় আপনাকে প্রস্তুত থাকা উচিত।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পরই বদলে যেতে থাকে রাশিয়া-ফিনল্যান্ডের সম্পর্ক। এরপরই দেশটির সাধারণ জনগণ ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার কথা বলা শুরু করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে ফিনল্যান্ডের ৩০ শতাংশ মানুষ ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। যুদ্ধ শুরুর পর সেটা ৭০ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। সূত্র: এবিসি নিউজ