লেবাননে হিজবুল্লাহর কয়েক হাজার সক্রিয় সদস্যের যোগাযোগ যন্ত্র (পেজার) বিস্ফোরণে ৩৭ জন নিহত ও তিন হাজারেরও বেশি লোক আহত হওয়ার ঘটনার পর এক প্রতিক্রিয়ায় মিলিশিয়া সংগঠনটির নেতা হাসান নসরুল্লাহ বলেছেন, এ হামলার মাধ্যমে রেড লাইন অতিক্র করেছে ইসরায়েল।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক ভাষণে নসরুল্লাহ স্বীকার করেন, এই হামলা হিজবুল্লাহর ওপর একটি ‘অভূতপূর্ব’ আঘাত। প্রত্যয়দীপ্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, ইসরায়েলের এই হামলার পাল্টা জবাব দেবে হিজবুল্লাহ। টেলিভিশনের তার ভাষণটি যখন প্রচারিত হচ্ছিল, তখনও রাজধানী বৈরুতের আকাশে প্রচণ্ড শব্দ করে উড়ে যাচ্ছিল ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। খবর এএফপির।
দুদিন ধরে পেজার বিস্ফোরণের মাধ্যমে চালানো হামলাকে ‘গণহত্যা’ ও ‘যুদ্ধ তৎপরতা’ হিসেবে বর্ণনা করে নসরুল্লাহ বলেন, ইসরায়েল আশঙ্কা করুক বা না করুক তাদের এই হামলার প্রত্যুত্তর ও যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে।
লেবাননজুড়ে সুপার মার্কেটে, রাস্তায় বা জানাজার নামাজে অংশ নেওয়ার সময় হিজবুল্লাহ সদস্যদের পেজার ও ওয়াকিটকিগুলো একের পর এক বিস্ফোরিত হলে যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সে বিষয়ে অবশ্য ইসরায়েল কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত দেশটির সঙ্গে লেবাননের সীমান্তের দিকে ইঙ্গিত করে গত বুধবার বলেন, ‘মধ্যাকর্ষণ কেন্দ্র ক্রমশ উত্তর দিকে সরে যাচ্ছে।’ এ ছাড়াও হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের নতুন ধাপের শুরুতে রয়েছি।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে গাজায় যে যুদ্ধের সূচনা হয় তাতে হামাসের মিত্রের ভূমিকা পালন করে আসছে হিজবুল্লাহ। প্রায় এক বছর ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধে ইসরায়েল গাজায় তার শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি নিজেদের উত্তর সীমান্তজুড়ে হিজবুল্লাহ মিলিশিয়াদের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে। যুদ্ধে লেবাননে কয়েকশ লোক নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগই যোদ্ধা। অন্যদিকে ইসরায়েলেও মারা গেছে বেশ কিছু সৈন্য। সংঘাতে দুদেশের সীমান্ত এলাকার বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে ১০ হাজারেরও বেশি নাগরিক।
এদিকে, গাজায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নসরুল্লাহ। নসরুল্লাহর এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।