আজকের বাংলাদেশকে আগামীর কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিয়ে যেতে যে প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করতেই শিক্ষায় আমূল পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেছেন, যখন প্রয়োজন তখন ছোটখাটো পরিবর্তন আনার পুরনো পদ্ধতিতে এখন আর কাজ হবে না।
সোমবার বিকালে তৌফিক ইমরোজ খালিদী লাইভে অতিথি হয়ে এসেছিলেন দীপু মনি। সরকার প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাক্রম ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে খোলামেলা আলোচনায় নানা প্রশ্নের উত্তর তিনি দিয়েছেন।
এই পরিকল্পনাগুলো সরকার কীভাবে বাস্তবায়ন করবে, এই জটিলতার মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা কতটা কীভাবে মানিয়ে নিতে পারবে- সেটই প্রশ্নগুলো মন্ত্রীর সামনে রেখেছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
উত্তর দিতে গিয়ে দীপু মনি শিক্ষায় এই পরিবর্তন আনার কারণটি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, জাতীয় পর্যায়ে সরকারের কতগুলো লক্ষ্য আছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ডিজটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ‘পূর্ণ’ হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগোচ্ছে। ২১০০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের একটা বদ্বীপ পরিকল্পনাও রয়েছে।
আবার কিছু আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারও বাংলাদেশের রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে হবে। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যাধিক্যের যে সুবিধার (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) কথা বলা হয়, তা কাজে লাগানোর জন্য আর বছর দশেক সময় পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে অনেক সময় নানা কারণে নষ্ট হয়ে গেছে।
এক ধর্মের শিশু অন্য ধর্মও জানবে? মন্ত্রী বললেন আশার কথা
সমাপনী পরীক্ষা না থাকলেও পঞ্চম ও অষ্টমে বৃত্তি-সনদ থাকবে: মন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, “এই যে এতগুলো আমাদের স্বপ্ন আছে, লক্ষ্য আছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার আছে, তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, তার যে চ্যালেঞ্জ আছে, সেগুলো মোকাবেলা করা। তার সফল অংশীদার হতে হলে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এই এতকিছুর জন্য মূল যে জায়গাটিতে আমাদের তৈরি হতে হবে, সেটা হচ্ছে শিক্ষা। মূল হাতিয়ার শিক্ষা।
“কাজেই সেই পরিবর্তনটা, কোনো ছোটখাটো টুকটাক রোজকার– এটা একটু সারিয়ে নিলাম, ওটা একটু পরিবর্তন করলাম, ওই পরিবর্তন দিয়ে আসলে আমাদের কাজ হবে না।… সেই বোধ থেকেই আমাদের সার্বিক এই পরিবর্তন।”
সরকার যে পারিকল্পনা নিয়েছে, তাতে ২০২৫ সাল থেকে পুরোপুরি নতুন শিক্ষাক্রমে পড়বে শিক্ষার্থীরা। ২০২৩ সাল থেকে এটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করার আগে আগামী জানুয়ারি থেকেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ২০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তিত শিক্ষাক্রমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হবে।
তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা না রাখা, এসএসসির আগে কোনো পাবলিক পরীক্ষা না নেওয়া, নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের বিভাজন তুলে দেওয়াসহ একগুচ্ছ পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে সেখানে।