শিগগিরই কাটছে না দেশজুড়ে বিদ্যুতের ঘাটতি। আপাতত লোডশেডিং করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চললেও অক্টোবর পর্যন্ত এই সংকট থাকবে বলে মনে করে বিদ্যুৎ বিভাগ। তারা জানালেন, সংকট মোকাবেলায় নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা এই বিদ্যুৎ ঘাটতি বিপাকে ফেলবে শিল্প ও কৃষি খাতকে। তাই কৃষি খাতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো এবং বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির বিকল্প উৎস খোঁজার তাগিদ দিলেন বিশেষজ্ঞরা।
চাহিদার অতিরিক্ত উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও জ্বালানি সংকটে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে বিদ্যুৎ খাত। দেশে মোট বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে ১৫২টি। যেগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে সচল ছিলো ১৩২টি কেন্দ্র। যেখানে সর্বোচ্চ উৎপাদিত হয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে প্রায় ৩০টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত সোমবার থেকে ডিজেলভিত্তিক ১০টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়। এই মুহূর্তে সচল প্রায় ১০০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত হচ্ছে ১১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আর বর্তমান চাহিদা রয়েছে ১৩ হাজার ৪৮৫ মেগাওয়াট। ফলে দৈনিক ২ হাজার ৩৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে।
সংকট মোকাবেলায় সারাদেশে লোডশেডিং করে প্রতিদিন ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি সামলানো হচ্ছে। বাকিটা সামলানো হচ্ছে সরকারি দপ্তর, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিপণীবিতানসহ বিভিন্ন জায়গায় সাশ্রয়ী ব্যবহারের মাধ্যমে। এমন পরিস্থিতি অক্টোবর পর্যন্ত থাকবে বলে ধারণা বিদ্যুৎ বিভাগের।
তিনি জানালেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জ্বালানির সংকট আরো বাড়তে পারে, তাই নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানো ও বিকল্প উপায় খোঁজায় মনোযোগ দেয়া হয়েছে। এবছর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে বাড়বে উৎপাদন। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে বাড়বে উৎপাদন। সেই সাথে ভারত থেকে আমদানি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
এমন পরিস্থিতিতে বেশি সংকটে পড়েছে শিল্প ও কৃষি খাত। তাই কৃষি ক্ষেত্রে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো এবং বাসাবাড়িতে লোডশেডিং বাড়িয়ে হলেও শিল্প প্রতিষ্ঠান সচল রাখার পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞরা। সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে গ্যাস ও কয়লা অনুসন্ধানে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শও দিলেন তারা।
সবাই গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হলে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব বলে মনে করে সংশ্লিষ্টরা।