দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মসহ নানা পন্থায় ডিজিটাল আক্রমণের শিকার হচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’। সাম্প্রতিক সময়ে আক্রমণের এই তীব্রতা আগের চেয়ে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার ‘নগদ’-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। পেছন থেকে একটি সুবিধাবাদী পক্ষ এক্ষেত্রে মদদ দিচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ভুয়া এই আইডিগুলো থেকে ‘নগদ’-এর লোগো বিকৃত করাসহ বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে ‘নগদ’-এর সেবা ব্যবহার করে সুবিধাপ্রাপ্ত গ্রাহকদের সেবাটি পরিহার করতে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করছে গোষ্ঠীটি।
এসব নেতিবাচক প্রোপাগান্ডা ও অপপ্রচার প্রতিরোধে আইনগত সহায়তা নেওয়ার বিষয়টি ‘নগদ’ কর্তৃপক্ষ সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, চলতি মাসের শুরুতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ‘নগদ’-এর অ্যাপের ওপর সংঘব্ধ আক্রমণ চালায়। চক্রটি ভাড়াটিয়া লোকদের মাধ্যমে ‘নগদ’-এর অ্যাপের রেটিং কমিয়ে দিতে নেগেটিভি রেটিং দিতে শুরু করে। ‘নগদ’ কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, উদ্ভাবনী সব সেবা নিয়ে ডাক বিভাগের এই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসটি বাজারে আসার পর এই খাতে গত এক দশক ধরে চলে আসা গ্রাহক বঞ্চণার অবসান ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। এতে করে ‘নগদ’-এর জনপ্রিয়তা হু হু করে বাড়তে থাকে। গ্রাহক বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে লেনদেনের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাতে করে যাত্রার মাত্র আড়াই বছরে ‘নগদ’ সাড়ে ৫ কোটি গ্রাহক পেয়ে যায়। একই সঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ছাড়িয়ে যায় ৭০০ কোটি টাকা। সেবাটির প্রতি গ্রাহকদের এমন আস্থা আর ভালোবাসার কারণেই একটি চক্র ‘নগদ’-এর ওপর রুষ্ট হয়ে দফায় দফায় আক্রমণ চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ বিষয়ে মিশুক বলেন, ‘গ্রাহকদের জীবনকে ডিজিটাল করতে আমরা সর্বদাই কাজ করে যাচ্ছি। গ্রাহকদের অর্থের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘একমাত্র নগদ দেশের এমএফএস বাজারের একচেটিয়াত্ব ভাঙতে সক্ষম হয়েছে। আর সে কারণে অনেকে নগদ-এর বিরুদ্ধে গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। আমরা আশা করব, এমন হীন ও অপচেষ্টা থেকে সকলে বিরত থাকবেন। রাষ্ট্রীয় সেবার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের গুজব ও মিথ্যা রটানো একটি রাষ্ট্রীয় গুরুতর অপরাধ।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেনও ‘নগদ’ নিয়ে বিভ্রান্তি ও অপ্রচার না ছড়াতে আহ্বান জানান।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্বার্থান্বেষী চক্রটি ‘নগদ’ এবং সরকার প্রধানকে জড়িয়ে দেশব্যপী তিন লাখের বেশি লিফলেট বিলি করে অপপ্রচার চালায় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে ‘নগদ’ মামলা করলে আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর তদন্ত করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পিবিআই-এর তদন্তে বেরিয়ে আসে ‘নগদ’-এর প্রতিদ্বন্দ্বী একটি কোম্পানি ছিল এই অপপ্রচারের মূল হোতা। তাদের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ওই কাজে নেতৃত্ব দেন, বলে তদন্ত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরও আসে।