বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: সংসদের ভেতরে-বাইরে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে বহুল আলোচিত বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। বড় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই বৃহস্পতিবার দুপুরে কিছু সংশোধনীসহ বিলটি পাস হয়।
পরিবর্তনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অনুসন্ধান কমিটিতে রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুই বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী হবেন—এমন বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া অনুসন্ধান কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে। আগে তা ১০ দিন ছিল।
বিলের শিরোনামে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সংসদে সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে এখন নাম হবে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল’।
এখন রাষ্ট্রপতির সই করার পর গেজেট আকারে প্রকাশ করা হলেই প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন পাবে বাংলাদেশ।
প্রথমবারের মতো আগামী ফেব্রুয়ারিতে আইনের মাধ্যমে একটি কমিশন গঠনেরও সুযোগ তৈরি হবে। অবশ্য পাস হওয়া এই বিল নিয়ে সংসদের ভেতরে-বাইরে নানা সমালোচনা আছে।
আজ সকালে জাতীয় সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ পাসের প্রস্তাব করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
জাতীয় পার্টি, বিএনপি, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাংসদেরা বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব দিয়ে আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিও টেনে আনেন বিএনপির সাংসদেরা।
ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন অনুসন্ধান কমিটিতে দুজন বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী রাখার প্রস্তাব দেন। আইনমন্ত্রী সেই প্রস্তাব গ্রহণে সায় দিলে সংসদ তা ভোটে গ্রহণ করে। অর্থাৎ, ইসি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে নাম সুপারিশের জন্য যে সার্চ কমিটি থাকবে, সেখানে একজন নারী থাকবেন।
বিলে বলা ছিল, রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন, যার সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক।
সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক। এখন রাষ্ট্রপতির মনোনীত ওই দুজন বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী রাখার বিধান যুক্ত হলো।
বিলে অনুসন্ধান কমিটির কাজ ১০ কার্যদিবস করার বিধান রাখা হয়েছিল। সেটি এখন ১৫ কার্যদিবস করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের এ–সংক্রান্ত সংশোধনী সংসদ গ্রহণ করে।
বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারাহানা, জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান, রওশন আরা মান্নান, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক ও ফখরুল ইমামের একাধিক সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করেন আইনমন্ত্রী। অবশ্য এগুলোর মাধ্যমে বিলে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি।