সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) সরিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মামলার তদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ (সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর) এ নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাংবাদিক দম্পতি হত্যা মামলার তদন্ত থেকে র্যাবকে সরিয়ে দিতে আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
হাইকোর্ট বলেছেন, এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার থেকে র্যাবকে সরানো হলো। এটি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে, বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞ, যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তদন্ত করাতে পারবে সরকার। ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতেও বলা হয়েছে।
এক যুগে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যার তদন্ত শেষ না হওয়া জাতির জন্য দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
পরিবার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবী শিশির মুনীর বলেন, ‘র্যাবকে সরিয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে টাস্কফোর্স গঠন করার মধ্য দিয়ে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের জট খুলবে।’
নিহত সাংবাদিক রুনির ভাই নওশের রোমান বলেন, ‘তদন্ত করার চেয়ে পরিবারকে হয়রানি করা হয়েছে, গণমাধ্যমে কথা বললেই চাপ দেয়া হতো, র্যাব আন্তরিক ছিলো না বলেই এক যুগে তদন্ত শেষ হয়নি।’
এর আগে রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কাজ পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআইকে দিতে চান পরিবার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবী শিশির মুনীর। হাইকোর্টে এ কথা জানান আইনজীবী শিশির মুনীর।
সেসময় তিনি বলেন, ‘অধিকতর তদন্ত করলেই সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।’
এসময় নিহত সাংবাদিক রুনির ভাই নওশের রোমান জানান, দীর্ঘ সময় এটি তদন্ত না হওয়ায় তারা হতাশ। তাই তার পরিবারের পক্ষ থেকে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নতুন সরকারের কাছে তাদের দাবি তদন্ত শেষ করার। ২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রায়েরবাজার নিজ বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন্নেসা রুনি খুন হন। সেই হত্যাকাণ্ডের জট এক যুগের বেশি সময় পার হওয়ার পরও খুলেনি।
সাগর-রুনি হত্যার পর কেটে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়। কিন্তু এ হত্যা রহস্যের কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি কোনো সংস্থাই। পুলিশ, সিআইডি’র হাতঘুরে মামলার তদন্তভার র্যাবের কাছে গেলেও নেই কোনো অগ্রগতি। ১১৩ বার পিছিয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়।