বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: দেশের সামুদ্রিক সীমানায় বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য আহরণ, মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা, পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি বৃদ্ধিতে ছোট বড় ১০ হাজার ফিশিং ভ্যাসেলে ট্রাকিং সিস্টেম যুক্ত করতে যাচ্ছে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়।
সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় নিবন্ধিত মাছ ধরার প্রায় ১০ হাজার নৌযানে এসব প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচলক খ: মাহবুবুল হক।
তিনি বলেন, ভ্যাসেল ট্রাকিং সিস্টেম যুক্ত করার জন্য ইতোমধ্যে প্রায় সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সব কিছূ ঠিক থাকলে চলতি বছরের জুনে এগুলো যুক্ত করা হবে। আর এজন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক। এগুলো যুক্ত করা হলে এক জায়গা থেকে সকল বোট মনিটরিং বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
মাহবুবুল হক বলেন, আমরা চাই দেশের সকল মাছ ধরা ট্রলার ও বোটগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকুক, যাতে করে চোরাই শিকারি আমাদের জলসীমায় ঢুকতে না পারে। পাশাপাশি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমাদের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্রগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকায় নিজেদের তদারকির মাধ্যমে মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভ্যাসেল ট্রাকিং সিস্টেম যুক্ত করার পাশাপাশি এগুলো পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা নীতিমালা তৈরি করে মন্ত্রণালয়েয়ে পাঠয়েছি। তিনি আশা করেন, যা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্যাটিং শেষে মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাবে।
সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক মনিষ কুমার মন্ডল বলেন, জুলাই ২০১৮ থেকে জুন ২০২৩ পর্যন্ত প্রকল্পে এছাড়াও সামুদ্রিক একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) মৎস্য জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে চিংড়ি, তলদেশীয় এবং ভাসমান প্রজাতির মৎস্যের মজুদ নিরূপন কর্মসূচি জোরদারকরণ; সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা সংস্থার সামর্থ্য বৃদ্ধিপূর্বক বিজ্ঞানভিত্তিক টেকসই মৎস্য মজুদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন; বাণিজ্যিক ও ক্ষুদ্রায়তন মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে অধিকতর কার্যকর পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি (এমসিএস) পদ্ধতির বাস্তবায়ন; উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, সার্ভিস সেন্টার, মৎস্যবাজর উন্নয়ন, আহরিত ও উৎপাদিত মৎস্যের ভ্যালূ চেইন তৈরি, গুণগতমান উন্নয়ন এবং অপচয় হ্রাস করা হবে।
এছাড়াও উপকূলীয় জেলা সমূহে ক্লাস্টার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে বাগদা চিংড়ির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও চিংড়ি রফতানি বৃদ্ধি করা; দরিদ্র মৎস্যজীবী জনগোষ্ঠির নেতৃত্বে উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ-এর টেকসই সহ-ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা এবং বিকল্প জীবিকায়নে সহায়তা করা; উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ এর টেকসই আহরণ ব্যবস্থাপনায় ‘সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করা হবে।
উপ প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, জুন মাসে ছোট ফিসিং বোটের (১ থেকে ১৩ গ্রস টন) ৮৫০০ টিকে গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন (জিএসএম) এবং মিডিয়াম ও বড় বোটের (৪০ থেকে তদুর্ধ্ব গ্রস টন) ১৫০০ টিকে অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (এআইএস) সরবরাহ করা হবে। এক্ষেত্রে এ দুটি যন্ত্র যারা আগে বিনন্ধিত হয়েছে, তার ভিত্তিতে বিনামূল্যে দেয়া হবে। প্রতিটি জিএসএম এর জন্য ব্যয় হবে প্রায় ২০ হাজার টাকা এবং এআইএস এর জন্য ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ হবে।