সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। এতে করে বাড়ছে ভোগান্তি। সেই সঙ্গে আশ্রয় কেন্দ্রেও পানি উঠেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেয়া বানভাসি মানুষগুলো। বন্যার পানি ঢুকেছে বাড়িঘরসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বিশুদ্ধ পানি আর খাদ্য সংকটে পানিবন্দীরা।
দীর্ঘ দিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এই বন্যা পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতির উন্নতি হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেটের মতো বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলাতেও। ভয়ংকর আকার নিয়েছে সিলেটর বন্যা পরিস্থিতি। বাড়ি ঘর, সড়ক যেদিকে চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। ২০০৪ সালের পর এমন দীর্ঘস্থায়ী বন্যা দেখেনি সিলেটবাসী।
এই অঞ্চলের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় সিলেটের সাথে গোয়াইনঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত। তলিয়ে গেছে জেলার সাতশ’র বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সিলেট নগরী ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ।।
এদিকে বন্যার পানি বাড়িঘরে ঢুকে পড়ায় সিলেট মহানগর ও জেলার ২৯৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে অনেক আশ্রয়কেন্দ্রও পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আরও দুর্ভোগে আশ্রয়গ্রহণকারীরা। বাড়ছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে, কোন সহায়তাই পাননি অনেক এলাকার মানুষ।
তবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা বলছেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়ার পাশাপাশি বানভাসি মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয়া হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনকেও জরুরি আশ্রয় কেন্দ্র বানিয়েছে সিটি করপোরেশন। মানুষকে যতদূর সম্ভব সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এদিকে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ বলেন, টানা বৃষ্টি আর উজান ঢলে পানি ক্রমেই বাড়ছে। নদীর পানি কমার কোনো প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে না। এই বন্যার পানি খুব দ্রুতই নামবে বলে মনে হচ্ছে না।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে সুনামগঞ্জেও। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধান, বাদাম আর সবজি ক্ষেতও। বাড়ি-ঘর আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি রাস্তাঘাটও পানির নিচে, মানুষ পড়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে।