সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে বুনো হাতির হামলার ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা।
সীমান্তের ওপারে ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে হাতিগুলো নেমে এসে আমন ধান, কলাগাছসহ নানা সম্পদের ক্ষতি করছে বলে গ্রামবাসীর ভাষ্য।
গ্রামের মানুষ রাতে আগুনের কুণ্ডলি জ্বালিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। কেউ কেউ পরিবারের শিশু ও বয়স্ক সদস্যদের পাশের গ্রামে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে।
এলাকাবাসীর উদ্বেগেরে কথা বিবেচনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সীমান্তে মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে হাতি না মারা এবং নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এই জঙ্গলে ‘তিনটি হাতি’ অবস্থান করছে বলে গ্রামবাসীর ভাষ্যএই জঙ্গলে ‘তিনটি হাতি’ অবস্থান করছে বলে গ্রামবাসীর ভাষ্যএকই সঙ্গে রাতে হাতির উৎপাত থেকে বাঁচতে এলাকাবাসীকে বসতঘরের পাশে আগুনের কুণ্ডলি জ্বালানোরও আহ্বান জানানো হয়।
তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য সুষমা জাম্বিল বলেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় থেকে ‘তিনটি বুনো হাতি’ নেমে আসে। ওই হাতিগুলো সীমান্তের গ্রাম কড়ইগড়া, মাহরাম, বড়গোপটিলাসহ কয়েকটি গ্রামের আমন ধান, কলাগাছ, অন্যান্য গাছসহ কৃষকদের ক্ষতি করছে।
বড়গোপটিলার উপরের দক্ষিণে মাহরাম টিলা জঙ্গলে বর্তমানে ওই ‘তিনটি হাতি’ অবস্থান করছে বলে তার ভাষ্য।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের পাশের গ্রামের স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন জানিয়ে এই নারী ইউপি সদস্য বলেন, যারা বাড়িতে অবস্থান করছেন তারা রাতে বাড়ির সামনে আগুন জ্বালিয়ে জেগে আছেন। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রাতে আগুন জ্বালিয়ে গ্রামবাসী বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছেরাতে আগুন জ্বালিয়ে গ্রামবাসী বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছেমাহরাম টিলার বাসিন্দা হেলিম মিয়া বলেন, “আমি মঙ্গলবার রাত থেকেই আতঙ্কে আছি। আমার বাড়ির কাছেই জঙ্গলে তিনটি হাতি অবস্থান করছে। গাছপালা বাঁশ ও ধানক্ষেত নষ্ট করে দিচ্ছে। কোন সময় মেজাজ বিগড়ে লোকালয়ে এসে উৎপাত করে এই চিন্তায় কয়েকটি পরিবার বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রতিবেশী গ্রামে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে।”
বুধবার তাহিরপুর থানা পুলিশ ও বিজিবি এসে হাতিকে আক্রমণ না করতে মাইকে প্রচারণা চালিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ সরদার বলেন, “তিনটি বুনো হাতির কারণে সীমান্তবাসীর উদ্বেগের কথা জেনে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ রাতে বসতবাড়ির সামনে ‘আগুন থেরাপি’ অব্যাহত রাখার কথা বলেছে। আমরা শুনেছি বসতবাড়ির সামনে আগুনের কুণ্ডলি থাকলে হাতি ভয় পেয়ে তার নিজের জায়গায় চলে যায়।
“বন্যপ্রাণীকে যাতে কোনো মানুষ না মারে সেজন্য স্থানীয় মসজিদে আমরা মাইকিংও করিয়েছি। হাতিকে মারলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”