শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
বাজারে বেড়েছে সেমাই-কিসমিস, চালসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে: এনসিপি নির্বাচনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে : মির্জা ফখরুল যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরলেন বিমান বাহিনী প্রধান ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ সেন্সরশিপ প্রশ্নে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ইলন মাস্কের মামলা নিউজিল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান ‘বিমানের টিকিটের দাম বাড়ানোর সুযোগ আর নেই’ এবার মোদিকে যে সতর্কবার্তা দিলেন ট্রাম্প যারা হত্যা-লুটপাটে জড়িত নন, তাদের রাজনীতিতে বাধা নেই: রিজভী ঈদের আগেই ক্রেতাশূন্য বাজার, চালের সঙ্গে মুরগিও চড়া বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের উদ্যোগ ঝলমলে আলোকসজ্জায় ফুটে উঠেছে ঈদের আমেজ আ. লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক: আসিফ মাহমুদ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না: জামায়াত আমির

স্কুল-কলেজ খুলছে ১২ সেপ্টেম্বর, সপ্তাহে ক্লাস একদিন, এগোতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় খোলাও

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১

বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বন্ধের পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীর ক্লাসের সময়ও এগিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৫ অক্টোবরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা বলা হয়েছিল।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শুক্রবার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে তাঁরা আবারও বসবেন। উপাচার্যরা যদি অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একই সঙ্গে খুলতে রাজি হন, তাহলে খুলবেন কিংবা ভিন্ন কোনো তারিখও নির্ধারণ করতে পারেন।

এদিকে শনিবার শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জানিয়েছেন স্কুল-কলেজে সশরীরে ক্লাস চালুর পর প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে একদিন ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে।

তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী যে সুনির্দিষ্ট তারিখ (১২ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করেছেন, ওইদিন থেকে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে ক্লাস শুরু করতে পারবো। প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস নেওয়ার চিন্তা করছি। তবে এটা পরিবর্তন হতে পারে। হয়তো আরও বেশিদিন শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আনতে পারবো। আপাতত আমাদের পরিকল্পনা এটাই। কয়দিন শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আনার বিষয়ে সম্মত হয়েছি তবে এর জন্য সর্বশেষ দিন (১১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে আবারও বসার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সেখানে যে সিদ্ধান্ত হবে, সে অনুযায়ী তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে কাল রোববার একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান শুক্রবার বলেন, খোলার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে একটি পথরেখা ঠিক করেছে। পথরেখা অনুযায়ী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে টিকা নিতে বলা হয়েছে। এরপর অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়া।

সেই পথরেখা অনুযায়ী, ১৫ সেপ্টেম্বরের পর টিকা নেওয়ার তথ্য দেখে হল খোলার সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া খোলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ১৩টি ছাত্রসংগঠন নিয়ে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের সভা ডাকা হয়েছে।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গতকাল শুক্রবার চাঁদপুরে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, তাঁরা আশা করছেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারবেন। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এর মধ্যে পড়বে। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

শুরুতেই সব শ্রেণির ক্লাস হবে কি না জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ধাপে ধাপে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে। প্রথমে হয়তো এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি এবং আগামী বছরের এই দুই স্তরের পরীক্ষার্থীরা প্রতিদিনই ক্লাস করবে। বাকি শ্রেণির ক্লাস হয়তো এক দিন করে হবে। পরে অবস্থা বুঝে ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে। একইসঙ্গে অনলাইন ও টেলিভিশনের ক্লাসও চলবে।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, খুব তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। তার এক দিন পরেই উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষণা এল।

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি রয়েছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিডের কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ রয়েছে এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে করোনা-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির কাছে পরামর্শ চেয়েছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় পরামর্শক কমিটি। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা প্রথম আলোকে বলেন, করোনার সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ হার থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। তা ছাড়া ধীরে ধীরে করোনার টিকা প্রাপ্তিও নিশ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সাপেক্ষে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।

একই দিন মেডিকেল কলেজসহ চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীর ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেখানেও একসঙ্গে না করে ধাপে ধাপে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে। এর মধ্যে মেডিকেল কলেজের প্রথম, দ্বিতীয় ও পঞ্চম বর্ষের ক্লাস শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করা হয়েছে ১৩ সেপ্টেম্বর।

অবশ্য কিছুদিন ধরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। স্কুলে স্কুলেও খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়। এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় পুনরায় স্কুল খোলার নির্দেশিকাও প্রণয়ন করেছে। তাতে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বেঞ্চে বসার ব্যবস্থা করা, স্কুলে ঢোকার আগেই তাপমাত্রা পরীক্ষা করাসহ বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা রয়েছে।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ