তিস্তায় লাল সংকেত। ঘড়-বাড়ি ছাড়ছে মানুষ। নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে বানভাসিরা। খুলে দেওয়া হয়েছে ব্যারেজের সব সুইজ গেইট। হুহু করে ঢুকছে পানি। দিকবিদিক ছুটছে মানুষ। প্লাবিত হচ্ছে গ্রাম। লালমনিরহাটে তিস্তাপাড়ে আতংক। বন্যা কবলিত ৪ উপজেলার ২৫ ইউনিয়ন। ৩০ হাজার পরিবার ভাসছে বানের পানিতে। ত্রানের জন্য চলছে হাহাকার।
সরকারি ত্রাণ হচ্ছে নয়-ছয়। গরিবের ত্রাণের চাল ধনীর চুলোতে। এক মুঠো চাল। তাও জুটছে না কপালে। ত্রাণের আশায় ছুটছে বানভাসীরা। পেটে জালায় রাত কাটাচ্ছে বন্যার্তরা। সরকারি ত্রাণের চাল জনপ্রতিনিধিদের জালে। প্রশাসনের নজরদারির অভাবে লালমনিরহাটের বানভাসিদের আর্তনাদ। বন্যার জলে ভাসছে লালমনিরহাট জেলার ৩০ হাজার পরিবার।
সরেজমিনে হাতিবান্ধার বন্যার্ত এলাকা সিন্দুর্ণা, সানিয়াজার, পাটিকাপাড়া গেলে ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ হাজারও বানভাসির। চারিদিকে অথৈ পানি। সিন্দুর্ণা গ্রামে বন্যার্ত ৮০ বছরের হাজেরা বেওয়ার নানা অভিযোগ।
হাজেরার বলেন, ‘মুই কি না খায়া মরিম, কায়েও মোক একনা চাউলও দেয়না, ঘর দুয়ারত পানি, হাটোং কোন্টে আর বেড়াং কোন্টে।’
রাহেলা বেওয়ারও বলেন, তিনদিন থাকি ঘড়োত পানি, আইজ আরও বাড়িল পানি মুই কোন্টে যাং এলা।’ পাটিকাপাড়ার আসুদ্দি,রহমত ও কালীগঞ্জের রহিম বকসের একই অভিযোগ।
বানের পানিতে আদিতমারীর মহিষখোচা বেশিরভাগ পরিবারের ত্রাণ বিতরণে রয়েছে অভিযোগ।
মহিষখোচার তিস্তাপাড়ের জালাল মিয়া জানান, মহিষখোচার মেম্বাররা নদীপাড়ের পানিবন্দি পরিবারের সরকারি চাল সিলিপ নিজের সাগাই দিয়ে তোলে। বন্যা নাই উঁচা স্থানের লোকজনদের রিলিপ দেয়।
আক্কেল আলী জানান, ইলিপ সিলিপ চাই না, চাই তিস্তার বাঁধ। রিলিফ বিতরণের অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে মহিষখোচা ইউপি চেয়ারম্যান মোছাদ্দেক হোসেন চৌধুরী জানান, রিলিফ দিলে অনিয়ম হবেই।
ওদিকে লালমনিরহাট জেলায় নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বার্হী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, তিস্তার পানি আরও ২দিন বাড়বে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানান, ত্রাণ বিতরণে কোনো অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।