করাচিতে ২০০৮ সালে ২০৩ রান তাড়ায় ১০১ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এতদিন রানের হিসেবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ হারের ব্যবধান ছিল সেটিই ১০২ রান।
সিডনিতে আজ বাংলাদেশ হারল ১০৪ রানে। ২০৫ রান তাড়ায় সাকিবের দল গুটিয়ে গেছে ১০১ রানেই। রানের হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।
চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ জয়ের পরে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১০১ রানেই গুটিয়ে যায় সাকিব বাহিনী।
সিডনিতে বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ের শুরুতেও ভালো কিছুর আভাস দিয়েও ধীরে ধীরে অবনমিত হয়েছে সে যাত্রা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে ২ ছক্কা আর ১ চার মেরে ১৭ রান তুলে নেন ওপেনার সৌম্য-শান্ত। পরের ওভারে আসে ৯ রান। ২.১ ওভারে দলীয় ২৬ রানে সৌম্য ১৫(৬) আউট হন। ১ রানের ব্যবধানে শান্ত ৯(৯) আউট হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
৪.৪ ওভারে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ১(৪) আউট হলে সে চাপ আরও বাড়ে। নিয়মিত যাওয়া-আসার মিছিলে নাম লেখান আফিফ হোসেনও। রাবাদার শর্ট বলে ওয়েইন পারনেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আফিফ ১(৫)।
এদিকে দলের এমন বিপদে হাল ধরতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। ১৩ বলে ১১ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। শূন্য রানে ফেরেন মোসাদ্দেক। উইকেটে বেশিক্ষণ স্থির হননি নুরুল হাসান সোহানও ২(৬)।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন লিটন দাস। দলীয় ৮৫ রানে তাব্রেইজ শামসির বলে স্টাবসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ২০৬ রানের টার্গেটে জয়ের জন্য যেভাবে ব্যাটিং দরকার ছিল সেটি দেখাতে পারেনি লাল-সবুজের দল। হতাশার বৃত্তে ঘুরিয়ে শেষ পর্যন্ত ১০৪ রানের হার মেনে নিতে হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সিডনিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টসে হেরে আগে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই তাসকিন তুলে নেন প্রোটিয়া ওপেনার ও অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার ২(৬) উইকেট।
তবে এরপরে প্রোটিয়ারা ঘুরে দাঁড়ায় ডি কক-রুশোর জুটিতে। দুজনে গড়েন ১৬৮ রানের জুটি। এই রানে ভর করে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২০৫ রান।
এদিন রাইলি রুশো নিজের দ্বিতীয় এবং এবারের বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন। ৮ ছক্কা ও ৭ চারে ৫৬ বলে ১০৯ রান করে সাকিবের বলে আউট হন তিনি।
বাংলাদেশের পক্ষে বোলিংয়ে তেমন সুবিধা করতে পারেননি কেউ। তাসকিন ৩ ওভার বল করে ১ টি উইকেট পেলেও রান দিয়েছেন ৪৬। পেসার হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। মুস্তাফিজুর রহমান আজও উইকেটের দেখা পাননি। ৪ ওভার বল করে কাটার মাস্টার দিয়েছেন ২৫ রান।
দলীয় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৩ ওভার বল করে ৩৩ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট। আফিফ ১ ওভারে ১১ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজ ৩ ওভারে ৩২ রান দিয়ে উইকেটের দেখা পাননি। এছাড়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২ ওভার বল করে ১৬ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৬.৩ ওভারে ১০১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের সব উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা : ২০ ওভারে ২০৫/৫ (টেম্বা বাভুমা ২, কুইন্টন ডি কক ৬৩, রাইলি রুশো ১০৯, এইডেন মার্করাম ১০; তাসকিন ৩-০-৪৬-১, মিরাজ ৩-০-৩২-০, হাসান মাহমুদ ৪-০-৩৬-১, মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-০, মোসাদ্দেক ২-০-১৬-০, সাকিব ৩-০-৩৩-২, আফিফ ১-০-১১-১)
বাংলাদেশ: ১৬.৩ ওভারে ১০১/১০ (শান্ত ৯, সৌম্য ১৫, লিটন ৩৪, সাকিব ১, আফিফ ১, মিরাজ ১১, মোসাদ্দেক ০, সোহান ২, হাসান ০, তাসকিন ১০, মুস্তাফিজ ৯* ; রাবাদা ৩-০-২৪-১, আনরিখ নর্কিয়া ৩.৩-০-১০-৪, তাব্রেইজ শামসি ৪-০-২০-৩, কেশব মহারাজ ৪-০-২৪-১, পারনেল ২-০-১৮-০)।
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১০৪ রানে জয়ী।
প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ: রাইলি রুশো।