দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম আগামী ১৬ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাজি সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ। তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন হাজি সেলিম। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানান আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ।
দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হাজি সেলিমকে সম্প্রতি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এ অবস্থায় ঈদের আগে চিকিৎসার জন্য তার বিদেশ যাওয়া নিয়ে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। এ নিয়ে কথা বলেন দুদকও। আর বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলেন হাজি সেলিমের বিদেশ যাওয়া নিয়ে। আইন মেনেই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়েছেন বলে দাবি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের।
বলেন, ‘হাজি সেলিম জরুরি চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলেন। আবার ফেরত চলে এসেছেন। আইনগতভাবে যেটুকু প্রশ্ন আসে, তিনি একজন সংসদ সদস্য, তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনকে মাথায় রেখেই তিনি গিয়েছেন। তিনি আইন মেনেই গিয়েছেন, আইন মেনেই আবার চলে এসেছেন।’
অন্য একটি অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য হাজি সেলিমমের বিদেশ যাওয়া নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন ছিল দুদক সচিবের কাছেও। দুর্নীতি দমন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, দণ্ডিত কেউ যেন ভবিষ্যতে আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশ যেতে না পারে সে বিষয়ে লিগ্যাল উইংয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে, দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজি সেলিম থাইল্যান্ড থেকে চিকিৎসা নিতে যান। তার দেশের বাইরে যাওয়া নিয়ে শুরু হয় আলোচনা ও সমালোচনা। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমানে ঢাকার হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ এপ্রিল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সংসদ সদস্য হাজি সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেয়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহালের রায় হাইকোর্ট থেকে নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে হাজি সেলিমকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। সে হিসেব অনুযায়ী আগামী ২৫ মে’র মধ্যে হাজি সেলিমকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
দুদকের করা অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের যে মামলায় হাজি সেলিমের সাজা হয়েছে, সেটি দায়ের করা হয়েছিল ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর। পরের বছর ২৭ এপ্রিল বিশেষ আদালত তাকে দুই ধারায় মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পরে, রায়ের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে আপিল করলে হাজি সেলিমের সব সাজা বাতিল করে দেয় আদালত। এরপর দুদক ফের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করলে শুনানি শেষে ২০১৫ সালে ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের দেয়া ওই রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে, হাজি সেলিমের আপিল পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।
সেই শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি ধারায় হাজি সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে এবং অন্য ধারায় ৩ বছরের সাজা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়।