বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে পরিণত হতে পারে। বর্তমানে সেটির মুখ যেদিকে রয়েছে সেখান থেকে যদি দিক পরিবর্তন করে পূর্বে টান নেয় তাহলে বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরসহ ১৯টি জেলার ৭৩০ কিলোমিটার উপকূলজুড়ে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
রবিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান তিনি। গভীর নিম্নচাপটি এখন উত্তর পশ্চিমে রয়েছে। এটি আজ সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানলে তা হবে বড়ো আকারে। অমাবশ্যার কারণে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ঝুঁকি মোকাবিলায় তৃণমূল পর্যায়ে সতর্কবার্তা দেওয়া, জেলা পর্যায়ে সাইক্লোন প্রস্তুতির পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে নিষিদ্ধ করা এবং উপকূলীয় জেলাগুলোতে এক হাজার প্যাকেজ শুকনো খাবার ও চালসহ খাবার সামগ্রী রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে সকালে দেওয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি সামান্য উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৯০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
নিম্নচাপটির কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এর বর্ধিতাংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে। সেইসাথে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস।
এতে আরও বলা হয়, গভীর নিম্নচাপের বর্ধিতাংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেওয়ার পাশাপাশি গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।