বৃত্তান্ত প্রতিবেদক: জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এ.এস.এম. আলী কবীর বলেছেন দেশে প্রায় ৬০,০০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নদী দখলকারী চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে প্রায় ১৮,০০০ জনকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকিদেরও খুব শিগগিরই উচ্ছেদ করা হবে।
তিনি বলেন, নদী দখলকারীরা শক্তিশালী। আমরাও দূর্বল নই, বরং তাদের থেকেও শক্তিশালী। কোন নদী দখলকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না। সকল অবৈধ দখলকারীকে তালিকানুযায়ী উচ্ছেদ করা হবে।
শনিবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে বিশ্ব নদী দিবস উদযাপন-২০২১ ও নদী রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ শীর্ষক আলোচনা সভা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যান নদী ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কার প্রদান, ‘নদী ও জলাশয় বিষয়ক’ আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে আরো শক্তিশালী করতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষনা করার পক্ষে মতামত দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কমিশনের সার্বক্ষনিক সদস্য কামরুন নাহার আহমেদ বলেন নদীর তীরে সকল ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। নদীর তথ্য পাঠ্যপুস্তকে অন্তভুক্ত করতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের অনুমোদন ছাড়া নদী এবং খালবিলে কোন প্রকল্প নেওয়া যাবে না। নদী দখলকারীদের নিজস্ব স্থাপনা নিজ খরচে উচ্ছেদ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার সাদত বলেন, ৫৫,৫৫০ বর্গমাইলের এ দেশে নদ নদীর প্রকৃত সংখ্যা কত সে ব্যাপারে সরকারি বেসরকারি সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা এখনো ঐক্যমত্যে পৌছুতে পারেননি। নদী মাতৃক আমাদের এ দেশের জন্য এটা চরম এক ব্যর্থতা। সরকারি সংস্থাগুলো বলছে ২৩০টি, উইকিপিডিয়ায় লেখা হয়েছে ৪০৫টি, শিশু একাডেমির শিশু বিশ^কোষে বলা হয়েছে ৭০০টি, লেখক সৈয়দ শামসুল হকের কবিতায় বলা হয়েছে ১৩০০টি, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলছি ১৫০০ টির ওপর, গবেষক ম. ইনামুল হক বলছেন প্রায় ২০০০ টি নদী রয়েছে।
তিনি বলেন, উজানের অভিন্ন স্বীকৃত নদী ৫৭ টি হলেও বাস্তবে রয়েছে ১০৭টি। বিভিন্ন সংখ্যার কারনে আমরা বিভ্রান্ত। তাই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে অনুরোধ করবো নদ-নদী গুলো দখলমুক্ত, প্রবাহমান ও জীবন্ত রাখতে চাইলে এর প্রকৃত সংখ্যা জাতির সামনে তুলে ধরতে।
সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন নদী বাঁচাও আন্দোলন ২০০৫ সাল থেকে ১৭ দফা দাবি নিয়ে নদীভিত্তিক স্বতন্ত্র সংগঠন হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। নদী এখন স্বত্তা হিসাবে আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে। নদীর আইনগত অভিভাবক জাতীয় রক্ষা কমিশন।
তিনি নদী আদালত গঠনের মাধ্যমে দখল ও দূষনকারীদের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান। নদী ভাঙ্গন রোধসহ নদী উন্নয়নের জন্য সরকারের বরাদ্ধকৃত টাকা যাতে কোন অসাধু চক্র লুটপাট করে খেতে না পারে সে জন্য নদী কমিশনকে মনিটরিং করতে হবে। তাছাড়া নদী রক্ষায় নদীর সীমানা নির্ধারণ করার জন্য জোর দাবী জানান।
নদী গবেষক এস এম শফিকুল ইসলাম কানু, সহ সভাপতি মাজেদা শওকত, খন্দকার আমিনুল হক টুটুল, এ কে এম সিরাজুল ইসলাম, মনির মুননা, ড. লুৎফর রহমান, ঢাকা বিভাগের সমন্বয়ক মোঃ বসির উদ্দিন, বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ক রফিকুল আলম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শামীম আহমেদ দেওয়ান, যুগ্ম সম্পাদক ড. মোঃ বোরহান উদ্দিন অরন্য, আমিরুল ইসলাম (লিন্টু), কলিমুল্লাহ ইকবাল, মোঃ তাজুল ইসলাম, মোঃ শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আলম, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন বুলবুল, জাহিদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হাসিবুল হক পুনম, জীব বৈচিত্র বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার হাছিবুর রহমান, অর্থ সম্পাদক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম অর্থ সম্পাদক এ কে এম নাজমুল হক, ঢাকা মহানগরের সভাপতি আনিসুর রহমান খান, সহ সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মহসীনুল করীম লেবু, ঢাকা জেলার সভাপতি মজিবুর রহমান, গাজীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি জামান ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাসুদ খান, হুমায়ুন কবির, শামীম মোহাম্মদ, ফেরদৌসী বেগম এতে বক্তব্য দেন।