রংপুরের পীরগঞ্জে জেলেপল্লীতে হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনা বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মণ্ডল, তার সহযোগী উজ্জ্বল হোসেন এবং ফেসবুকে পোস্টকারী পরিতোষ সরকারের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে ঘটেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সৈকত মণ্ডল ও তার আরেক সহযোগী রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, উজ্জ্বল ও পরিতোষ দুজনেই পীরগঞ্জের বড় করিমপুর মাঝিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
তবে তাদের মধ্যে কী নিয়ে বিরোধ ছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি এই র্যাব কর্মকর্তা।
র্যাব মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘পরিতোষ ফেসবুকে যে পোস্টটি করেছিলেন, উজ্জ্বল সেটির স্ক্রিনশট নিয়ে সৈকতকে পাঠান। এরপর সৈকত কিছু টেক্সট যোগ করে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্টটি শেয়ার করেন। মানুষকে উসকানি দিতেই কাজটি করেন তিনি।’
পুরো ঘটনাটিই পূর্বপরিকল্পিত ছিল উল্লেখ করে র্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন সৈকত। পরিতোষ পোস্টটি দেওয়ার পর তিনি সুযোগটি নেন এবং হামলার নেতৃত্ব দেন।’
সৈকত মণ্ডল (২৪) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কারমাইকেল কলেজ শাখার দর্শন বিভাগের সহ-সভাপতি ছিলেন। হামলার একদিন পর গত ১৮ অক্টোবর কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগ তাকে সংগঠনের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে দল থেকে অব্যাহতি দেয়। ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক তানজিরুল ইসলামকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়।
গতকাল এক বিবৃতিতে ইউনিটের সভাপতি সাইদুজ্জামান বলেন, ‘হামলার সময় ২ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল জানতে পেরে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পুলিশ এখন হামলায় তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখবে।’
তবে সংবাদ সম্মেলনে সৈকতের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ না করে র্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘সৈকত ফেসবুকে ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছেন। আর রবিউল ও অন্যরা স্থানীয় মসজিদের লাউডস্পিকার ব্যবহার করে হামলার জন্য মানুষ জড়ো করেছেন। রবিউল এ কাজটি করেছেন সৈকতের নির্দেশনায়।’
স্থানীয়রা জানান, রবিউল (৩৬) পীরগঞ্জ উপজেলার বটেরহাট মসজিদের ইমাম মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।
গত ১৭ অক্টোবর পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, বটতলা ও হাতীবান্ধা গ্রামের কমপক্ষে ২৫টি বাড়ি এবং দোকানে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। একটি সরকারি সংস্থার মতে, এ ঘটনায় মোট ৬৬টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।