গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বেড়ে চলেছে। বৃষ্টি ও উজানের ঢলে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২০ ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ১০ হাজার পরিবারের অন্তত ৪০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এছাড়া বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির পাট, বাদাম, তিল, কাউনসহ বিভিন্ন শাকসবজি। তবে কী পরিমাণ জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই জেলার কৃষি বিভাগে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত অপারেটর খায়নুর নাহার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঘাঘট নদীর পানি শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও যমুনার পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা ও করতোয়ার পানি এখনো নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধের কয়েকটি জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর উপজেলার বাগুড়িয়া থেকে কামারজানি পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কিছু জায়গা। এরই মধ্যে পানির চাপে সাঘাটা উপজেলার দক্ষিণ উল্যা গ্রামে শ্মশানঘাট সড়কের বেশির ভাগ অংশ ভেঙে গেছে। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এস এম ফয়েজ উদ্দিন জানান, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
তিনি জানান, চার উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ৮০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তালিকা করে এসব চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট মজুতের পাশাপাশি ৪০০ শতাধিক তাঁবু, স্থায়ী ১০টিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, মেডিকেল টিম এবং বেশ কিছু নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।