মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
দেশের আর্থিক খাত এখন শূন্যের মধ্যে ঝুলছে : রিজভী নেতানিয়াহু-হানিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন আইসিসিতে নির্বাচন কমিশনারদের বেতন-ভাতা সুনির্দিষ্ট করে আইন অনুমোদন বাজার মনিটরিংয়ে জোর দেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক দেবে সরকার, পুরস্কার কোটি টাকা ও স্বর্ণ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু ৫ জুন ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক উপজেলা নির্বাচনে ২ লাখ আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন কাল দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন, সরঞ্জাম যাচ্ছে কেন্দ্রগুলোয় ‘ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে ইসি উদ্বিগ্ন নয়’ প্রত্যেকটি সেক্টরে লুটপাট করে শেষ করে দিয়েছে: রিজভী রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পাঁচ দিনের শোক ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে দেশে দেশে শোক দলের শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করলে কেউ রেহাই পাবে না: কাদের ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : কাদের

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : মে ১০, ২০২৪
অশান্ত কাঁচাবাজার, বেড়েছে মাছ, মাংস মুরগির দাম

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না কিছুতেই; বরং দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এতে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশিরভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া অস্থিরতা তৈরি হয়েছে ডিম ও মুরগির বাজারেও।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজারে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে বাজারে বাড়তি ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম। বাজারে লাউ ও ঢ্যাঁড়স ব্যতীত কোনো সবজিই ৫০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে না। গত সপ্তাহে তুলনায় আজ প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ১০ থেকে ২০ টাকা। পাশাপাশি মাছের বাজারও বেশ চড়া।

ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে। এদিকে, বাজারে প্রায় সবকিছুর দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে সবজি কেনা অসাধ্য হয়ে যাবে বলেও হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা।

শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা বাজার, মহাখালী বাজার, রায়ের বাজার ও ধানমন্ডি স্টাফ কোয়ার্টার বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের তুলনায় মিরপুরের বাজারগুলোতে ডিম ও মুরগির দাম বেশি বেড়েছে। কারওয়ান বাজারে বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ১২০ টাকা ছিল। এছাড়া সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা ডজন, যা এক সপ্তাহ আগে ১১৫ টাকা ছিল। অন্যদিকে দাম বেড়েছে সোনালী জাতের মুরগির। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪১০-৪২০ টাকায়। যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টাকা বেশি। তবে ব্রয়লার ২২০-২৩০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে। আবার বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও এক সপ্তাহের ব্যবধানে দর প্রতি ডজনে ২০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় ঠেকেছে।

আজকের বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। এছাড়া, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি দেশি মুরগি আগের বাড়তি দামেই ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৮০ টাকা এবং মানভেদে প্রতি কেজি খাসির মাংস ৯০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মহাখালী বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী তৌহিদুল ইসলাম। ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য মুরগির যে দাম, তাতে মুরগি কেনা তো দূরে থাক, হাতই দেওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ মাংসের চাহিদা মেটানোর জন্য ব্রয়লার মুরগির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান বাজারে সেই ব্রয়লার মুরগির দামও বাড়তি যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ২২০ টাকা কেজি দরে একটি দেড় কেজি ওজনের ব্রয়লার কিনলাম। আসলে ব্রয়লার মুরগির দাম তো এত হওয়ার কথা নয়। যখন যেভাবে ইচ্ছা, ব্যবসায়ীরা এর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ সাধারণ ক্রেতার কথা ভেবে বাজার মনিটরিংয়ের কোনও উদ্যোগ দেখি না। এত দাম দিয়ে সাধারণ নিম্নআয়ের ক্রেতাদের ব্রয়লার মুরগি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব সবজির দামই বেড়েছে। গত সপ্তাহে পটলের দাম ছিল ৫০ টাকা, আর আজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়া, বরবটি ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, ঝিঁঙে ৬০ টাকা, এক ফালি মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ১০০-১২০ টাকা, কচুমুখি ১৪০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, প্রতি পিস চাল কুমড়া ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ১২০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ৬০ টাকা ও প্রতি পিস বাঁধা কপি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রায়ের বাজারের সবজি বিক্রেতা রমিজ মিয়ার দাবি, দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপপ্রবাহে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়েছে। চাহিদার তুলনায় কৃষক তেমন সবজি উৎপাদন করতে পারেনি। তাই উৎপাদনের ব্যাঘাত ঘটায় ঢাকায় সবজির সরবরাহ কম, এ কারণে সবজির দাম বেড়েছে।

বাজারে সবজি কিনতে আসা রহমতুল্লাহ বলেন, সবজির দাম যেভাবে বাড়ছে, কিনে খাওয়াই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কেবল লাউয়ের দাম কিছুটা কম। তাছাড়া, সবকিছুর দাম বেড়েছে। বেগুন না কি মানুষ খায় না, অথচ সেই বেগুনও ১০০-১২০ টাকা কেজি।

তিনি বলেন, আমাদের কথা চিন্তা করবে কে? আমরা যারা নিম্নআয়ের মানুষ, এমন চলতে থাকলে কোনো সবজিই আর কিনে খেতে পারব না।

এদিকে, রায়ের বাজার ও ধানমন্ডি স্টাফ কোয়ার্টার বাজারে প্রতিটি মাছেই দাম বেড়েছে।

বর্তমানে প্রতি কেজি টেংরা ৮০০ টাকা কেজি, পাবদা ৫৫০ টাকা, শিং ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, রুই ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৩২০ টাকা, ইলিশ (৫০০ গ্রাম) ৯০০ টাকা, (৫০০ গ্রামের বেশি) ১০০০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৬০০ টাকা, চিংড়ি ১২০০ টাকা, রুপচাঁদা ৯০০ টাকা ও কালবাউশ ৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

মাছ ব্যবসায়ী মো. আজাদ বলেন, মাছের দাম কিছুটা বেশি, আমাদের কিছু করার নেই। বেশি দাম দিয়ে কিনে এনে বেশি দামে বিক্রি করি। আর দেশি মাছের দাম এমনিতেই একটু বেশি থাকে।


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ