ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর মস্কোর বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে পশ্চিমা বিশ্ব। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন রাশিয়ার ধনকুবেররা। ফলে বিদেশে পাড়ি জমাতে চাইছেন রুশ ধনকুবেরদের অনেকেই।
যুদ্ধের মধ্যে চলতি বছরই রাশিয়া ছাড়তে পারেন ১৫ হাজারের বেশি ধনকুবের। অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স এর বরাত দিয়ে, মঙ্গলবার এতথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’। সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ লাখ ডলারের বেশি এমন রাশিয়ান ধনকুবেরদের ১৫ শতাংশই এখন আর নিজ দেশে থাকতে চাইছেন না।
রুশ ধনকুবেরদের দেশ ছাড়ার এমন মনোভাব নিয়ে ‘হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স’ এর গবেষক অ্যান্ডু অ্যামোইলস বলেছেন, ধনকুবেরদের রাশিয়া ছাড়ার ঘটনা নতুন নয়। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে মস্কোর ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এই প্রবণতা গত এক দশকের তুলনায় বাড়িয়ে দিয়েছে। ধনকুবেরদের দেশ ছাড়ার এই প্রবণতা রাশিয়ার জন্য সতর্কবার্তা বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অ্যান্ড্রু অ্যামোইলস আরও বলেন, একটি দেশের পতন যখন অনিবার্য হয়ে পড়ে, ব্যক্তিগত সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায় সম্পদ নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান সেই দেশের ধনী ব্যক্তিরা।
তবে চলতি বছর রাশিয়া ছেড়ে ১৫ হাজারের বেশি ধনকুবের কোথায় যাবেন, এবিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বিভিন্ন দেশের ধনী ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সেটেল হতে বেশি পছন্দ করলেও বর্তমানে অনেকেই পাড়ি জমাচ্ছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে রাশিয়ান ধনকুবেরদের ইউরোপমুখী হওয়ার চেয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতেই সেটেল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, বিশেষত দুবাইয়ে। কারণ, রাশিয়া থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ফ্লাইটে সেখানে পৌঁছানো যায়। এখনো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসেনি দুবাইয়ে থাকা রুশ নাগরিকদের তহবিল। দেশটিতে সম্পত্তি কিনেছেন অনেক রুশ ক্রেতা। এছাড়া রুশ ধনকুবেরদের গন্তব্যের তালিকায় অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, ইসরায়েল, মাল্টা, মরিশাস, মোনাকো প্রভৃতি দেশ থাকতে পারে।