শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
আবারও ফ্যাসিবাদের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে: রিজভী গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ ঝাড়লেন তামিম বাংলাদেশে হিন্দু–মুসলমানে কোনো বিভেদ নাই: রুহুল কুদ্দুস দুলু ইনজুরিতে মাদ্রিদ ওপেন থেকে সরে দাঁড়ালেন আলকারাজ ‘তিন পার্বত্য জেলাকে কফি ও কাজুবাদামের দেশ বানাতে চাই’ ২৬ বছর পর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জড়ানোর শঙ্কা ‘স্থানীয় সরকার না থাকার কারণে জনগণ সাফার করছে’ ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ডিসেম্বরের বদলে জুনে ভোট হলে সমর্থন দেবেন না বিএনপি কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের মধ্য দিয়ে ভারত পানিযুদ্ধ শুরু করেছে! সমাধান আলোচনাতেই: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভারত–পাকিস্তানকে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৬০

পদ্মা সেতুতে গাড়ি-রেল একসঙ্গে কিনা, সিদ্ধান্ত নভেম্বরে

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : অক্টোবর ৩, ২০২১

বৃত্তান্ত ডেস্ক: আগামী জুনে পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলাচল শুরুর সময়েই সেতুর রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু করবে কিনা, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এখনো রেললাইনের অংশটুকু রেলপথ মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দেয়নি সেতু কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে সেতুর রেলপথে চলছে গ্যাস লাইন বসানোর কাজ।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সড়কের সঙ্গেই ট্রেন চালু করতে চাইলেও পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসাতে সময় লাগবে কমপক্ষে ছয় মাস। তাই আগামী জানুয়ারির মধ্যে সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজ শুরু করতে না পারলে জুনে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। একইসঙ্গে যানবাহন ও রেল চালুও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

এ অবস্থায় আগামী ১৫ নভেম্বর পদ্মা সেতু পরিদর্শনে যাবে সেতু কর্তৃপক্ষ। এই পরিদর্শকদলে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কর্মকর্তারাও থাকবেন বলে জানা গেছে।

সেতুর রেললাইনের অংশ কবে নাগাদ রেলপথ মন্ত্রণালয়কে সেতু কর্তৃপক্ষ হস্তান্তর করবে, এই পরিদর্শন থেকেই সে বিষয়ে তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও মার্চের আগে রেললাইন হস্তান্তরের সুযোগ খুবই কম। তবু সেতু কর্তৃপক্ষের কাজের অবস্থান বুঝে হস্তান্তরের নতুন সময় নির্ধারিত হবে।

রেল সংযোগ প্রকল্পের সূত্র বলছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে রেলের অংশ বুঝিয়ে দিতে সেতু কর্তৃপক্ষকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, এখনো সেটির জবাব মেলেনি। এখন এই পরিদর্শনের সিদ্ধান্তই ভরসা। সেতু কর্তৃপক্ষ যদি তাদের ভারী কাজ গুছিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে আনতে পারে, তাহলে জানুয়ারি থেকেই একসঙ্গে কাজ করা যাবে।

এদিকে মূল পদ্মা সেতুতে এখন চলবে কার্পেটিংয়ের কাজ। বর্তমানে মূল পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৫ শতাংশ।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী জুনে পদ্মা সেতুর সড়কপথের সঙ্গে রেলপথের মাওয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার অংশ চালু করার কথা। কিন্তু জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু না হলে ডিসেম্বরকে পরের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে মাওয়া-ভাঙ্গার বদলে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথ চালু করার কথা রয়েছে। যদিও সর্বশেষ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা-মাওয়া ও মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের গড় অগ্রগতি হয়েছে ৫৪.৭৫ শতাংশ।

সূত্র বলছে, সরকার চাইলে সড়ক ও রেলপথ একসঙ্গে চালু করা সম্ভব। কেননা রেললাইন বসানোর পাশাপাশিও সেতু কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ করতে পারবে।

পদ্মা রেল সেতু সংযোগ প্রকল্পের অধীন ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হবে। সেখানে লুপ ও সাইডিং ৪২.২২ কিলোমিটার এবং তিন কিলোমিটার ডাবল লাইনসহ মোট ২১৫.২২ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্যাক নির্মাণ করা হবে। এই পুরো পথে নিচু জায়গায় ২৩.৩৭৭ কিলোমিটার উড়াল (ভায়াডাক্ট) রেলপথ নির্মাণ করা হবে। থাকছে ৬৬টি বড় সেতু। ছোট সেতু, কালভার্ট, আন্ডারপাস থাকবে ২৪৪টি। নির্মাণ করা হবে একটি হাইওয়ে ওভারপাস ও ২৯টি লেভেলক্রসিং।

একই সঙ্গে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত এই রেলপথে ১৪টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে আর বিদ্যমান ছয়টি স্টেশনের অবকাঠামো নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় উন্নয়ন করা হবে।

প্রাথমিকভাবে পুরো রেলপথকে তিন ভাগ করে কাজ করছে রেল মন্ত্রণালয়, যেখানে প্রথমে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এছাড়া ঢাকা থেকে মাওয়া ও ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত অংশকে দুই ভাগ করা হয়েছে।

সর্বশেষ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুরো রেলপথের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৪৩.৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৪০.৫০ শতাংশ, ভাঙ্গা-যশোর অংশের অগ্রগতি ৩২ শতাংশ এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করা মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৬৯ শতাংশ।

এই মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের ১২টি বড় সেতুর মধ্যে সব কয়টির নির্মাণকাজ শেষ। নির্মাণ করা হবে ২৬.৯৭৮ কিলোমিটার বাঁধ। এরই মধ্যে শেষ করা হয়েছে ২২.১৩৮ কিলোমিটার বাঁধ। ৬৯টি কালভার্ট ও আন্ডারপাসের মধ্যে ৬৪টির কাজ শেষ হয়েছে। এক হাজার ৭১০টি ওয়ার্কিং পাইলের মধ্যে শেষ হয়েছে এক হাজার ৭০২টির কাজ। দুই হাজার ৫৮টি বক্স গার্ডারের মধ্যে ১০টির কাজ বাকি আছে। ভায়াডাক্ট-২-এর ৬৮টি পিয়ার ও অ্যাবেটমেন্টের মধ্যে ৬৬টির কাজ শেষ হয়েছে। ৬৭টির মধ্যে ৬৪টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। আর ভায়াডাক্ট-৩-এর ১০৮টি পিয়ার ও অ্যাবেটমেন্টের মধ্যে ১০৭টির কাজ শেষ হয়েছে। ১০৭টির মধ্যে ১০৫টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। ১৪টির মধ্যে তিনটির কাজ চলমান থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো রেলস্টেশন অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। আর ভায়াডাক্ট-২-এ ২.৫৮৯ কিলোমিটার ট্যাক স্লাব বসাতে হবে, যেখানে মাত্র শূন্য দশমিক ১০ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে।

আর ঢাকা-মাওয়া অংশের ২১.৫ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ১৩ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে, ৩.৭ কিলোমিটার বাঁধের কাজ চলমান। ১৫টি বড় সেতুর মধ্যে ৯টির কাজ শেষ হয়েছে। ৩১টি কালভার্টের ও আন্ডারপাসের মধ্যে ২০টির কাজ শেষ, চলমান রয়েছে দুটির কাজ। (সূত্র: কালের কণ্ঠ)


এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ