সিলেটের সদর উপজেলার কিছু অংশ, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে নেমেছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান।
সিলেট ক্যান্টনমেন্টের জিওসি মেজর জেনারেল মো হামিদুল হক জানান, মোট নয়টি ব্যাটালিয়ন কাজ করছে। তারা দুর্গম এলাকায় পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার, নতুন আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকিতে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য স্থাপনা সুরক্ষায় কাজ সমন্বিতভাবে কাজ করবে। এছাড়া ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে নেয়া হচ্ছে যান্ত্রিক সহযোগিতা।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানান, দুই উপজেলার অবস্থা খুবই খারাপ। মানুষজন ঘর থেকে বের হতে পারছে না। আমার সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছি। তারা রেসকিউ বোর্ড নিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাতে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা প্রসঙ্গে স্ট্যাটাস দেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জফির সেতু। তিনি বলেন, ‘রাতেই সেনাবাহিনী নামানো প্রয়োজন। পরিস্থিতি ভয়াবহ দিকে যাচ্ছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ তলিয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দী মানুষকে এখনই উদ্ধার কাজের উদ্যোগ নিতে হবে।’
গার্ডিয়ান প্রকাশনীর মালিক এবং বগুড়া গুনাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তাঁর ফেসবুক পোস্টে সেনাবাহিনী নামানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। ওই স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, মোবাইলে চার্জ আছে বলে সিলেটের বিপদাপন্ন লোকজন এখন পর্যন্ত মুঠোফোনে উদ্ধারের সাহায্য চাইতে পারছে। বিদুৎ বন্ধ অলরেডি। কিছুক্ষণ পর তাদের হাহাকার শোনারও সুযোগ থাকবে না। প্রতি মূহুর্তে পানি বাড়ছে। অনবরত বৃষ্টি নামছে। মা তার সন্তানকে হারানোর ভয়ে কাঁদছে। চোখের সামনে অনেককিছু হারিয়ে যাচ্ছে। বাবাদের অসহায় মুখ। আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ছে অনবরত। খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। না আছে শোয়ার ব্যবস্থা, না আছে বসার উপায়। এই মুহূর্তে দরকার উদ্ধার অভিযান। ট্রলার ও নৌকা দরকার। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীকে দ্রুত মোতায়েন করার বিনীত অনুরোধ করছি।
এক মানবিক বিপর্যয় নেমে এসে সিলেটের বুকে।
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওবায়দুল হক বলেন, সুনামগঞ্জের সাধারণ মানুষ আগে কখনো এমন বিপর্যয়ে পড়েননি। তারা ধারণাও করতে পারছেন না পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেবেন। পরিবার-পরিজন, ঘরবাড়ি ও গবাদিপশু সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। ঘরে পানি ওঠায় খাটের উপর চেয়ার তুলে চেয়ারে বসে রাত কাটাচ্ছেন। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে উদ্ধার ও ত্রাণসহায়তা বিতরণ কাজ পরিচালনা করা ছাড়া অন্যদের পক্ষে এই পরিস্থিতি সামলে ওঠা কঠিন হবে।